পৃষ্ঠাসমূহ

শনিবার, ১০ মার্চ, ২০১২

Pharmacist (ফা র্মা সি স্ট)

Pharmacist (ফা র্মা সি স্ট)

একজন ফার্মাসিস্ট যেমন পারেন ওষুধের যৌক্তিক এবং সঠিক মান নিশ্চিত করতে, তেমনি আমাদের জাতীয় আয় বৃদ্ধিতেও তিনি ভূমিকা রাখতে পারেন। কেননা আমাদের দেশের তৈরি ওষুধ এখন ইউরোপ, আমেরিকাসহ বিশ্বের ৭০টিরও বেশি দেশে রপ্তানি হচ্ছে। তাই দেশে যেমন এ পেশার চাহিদা রয়েছে তেমনি বিদেশেও রয়েছে উজ্জ্বল সম্ভাবনা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাসি অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. আবদুর রশীদ বলেন, আমাদের দেশের দক্ষ ও যোগ্যতাসম্পন্ন ফার্মাসিস্টদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় অতি অল্প সময়ের মধ্যে বাংলাদেশের ওষুধ শিল্প আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বেশ সুনাম অর্জন করেছে এবং বাংলাদেশের তৈরি জীবন রক্ষাকারী ওষুধ আমাদের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে বহির্বিশ্বে রফতানি হচ্ছে।
সুতরাং দেশে তো বটেই বিদেশেও একজন দক্ষ ফার্মাসিস্ট ক্যারিয়ার গড়তে পারেন। বাংলাদেশের ৬টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সহ ২০টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে এ বিষয়ে ৪ বছর মেয়াদি স্নাতক ডিগ্রি অর্জনের সুযোগ রয়েছে। বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রছাত্রীরা এ বিষয়ে পড়ার সুযোগ পাবেন।
কাজটা কী
ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রি বা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের ডিপার্টমেন্ট অনুযায়ী ফার্মাসিস্টের কাজের ধরন নির্ধারিত হয়। তবে সার্বিকভাবে বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টের কাজের সমন্বয় করে ফার্মাসিস্টরা যে কাজগুলো করে থাকেন সেগুলো হল-ওষুধ গবেষণা ও উন্নয়ন, ওষুধের ফর্মুলা তৈরি, ওষুধ উত্পাদন, মান নিয়ন্ত্রণ ও বাণিজ্যিক ভিত্তিতে বাজারজাতকরণ, টিকা আবিষ্কার এবং প্রতিষেধক উত্পাদন। এর বাইরেও ওষুধের কার্যকরণ সম্পর্কে অবহিত করার লক্ষ্যে ডাক্তারদের নিয়ে বিভিন্ন সেমিনার-সিম্পোজিয়াম, আলোচনা সভা ইত্যাদি পরিচালনা, র-ম্যাটেরিয়াল সোর্সিং নিশ্চিতকরণ, উত্পাদন পরবর্তী দাম নির্ধারণ, ওষুধের পরিমাণ নির্ধারণ, ফার্মাসিউটিক্যালস মেশিনারি সম্পর্কে ধারণা অর্জন এবং ওষুধের গুণগত মান নিশ্চিত করাও ফার্মাসিস্টের কাজ।
কোথায় মিলবে কাজ
ফার্মাসি ডিগ্রিধারীদের প্রধান কর্মক্ষেত্র হচ্ছে ফার্মাসিউটিক্যাল সেক্টর। সেখানে প্রোডাকশন, কোয়ালিটি কন্ট্রোল, মার্কেটিং, প্রোডাক্টস ডেভেলপমেন্ট অফিসার হিসেবে কাজ করার সুযোগ আছে। এ ছাড়া হসপিটাল ফার্মাসিস্ট, ক্লিনিক্যাল ফার্মাসিস্ট, কমিউনিটি ফার্মাসিস্ট হিসেবেও তারা কাজ করতে পারেন। এর বাইরে  বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি রিসার্চ অর্গানাইজেশন, সরকারি ওষুধ পরীক্ষাগার, ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরেও রয়েছে কাজের সুযোগ। সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষকতার সুযোগ তো রয়েছেই।
বিদেশে ফার্মাসিস্টদের কাজের ক্ষেত্র আরও বিস্তৃত। সেখানে ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিসহ হসপিটাল ফার্মাসিস্টদের রয়েছে ব্যাপক চাহিদা। তাছাড়া রিটেইল ফার্মাসিস্টদেরও চাহিদা রয়েছে যেখানে ফার্মাসিস্টরা ফার্মেসি নিয়ন্ত্রণ করেন এবং ফার্মাসিউটিক্যাল শপগুলোতে নির্বাহী হিসেবে কাজ করেন।
স্কয়ার হসপিটাল লিমিটেডের ফার্মাসি বিভাগের কর্মকর্তা মানিক চন্দ্র শীল বলেন, বিফার্ম ডিগ্রিধারীরা সাধারণত পেশাজীবনের শুরুতে ১৫-৩০ হাজার টাকা সন্মানীতে কাজ শুরু করেন। তবে সন্মানীর বিষয়টি কোম্পানির ওপর নির্ভর করে। পরবর্তীকালে অভিজ্ঞতা ও পদোন্নতি হলে লাখ টাকা সন্মানীও অর্জন করা সম্ভব।
পেশায় সফল হতে
মানিক চন্দ্র শীল বলেন, এ বিষয়ে ভালো করতে হলে পড়াশোনার বিকল্প নেই। যারা এ বিষয়ে গ্র্যাজুয়েশন করে এ পেশায় আসতে চায় তাদের যে কোর্স-কারিকুলামগুলো আছে সেগুলো
ভালোমতো অনুসরণ করতে হবে। বিশেষ করে হসপিটাল ফার্মাসিতে কাজ করতে গেলে ফার্মাকোলজি, বায়োফার্মাসিটিক্স,
ফার্মাসিউটিক্যাল টেকনোলজি, মাইক্রোবায়োলজি প্রভৃতি বিষয় খুব ভালো করে জানতে হবে। এছাড়া ফিজিওলজি অ্যানাটমি বিষয়েও জানতে হবে। কারণ একটি বিষয় আরেকটি বিষয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত। এছাড়াও বিষয়ভিত্তিক স্বচ্ছ ধারণা, সেবা ও গবেষণার মন-মানসিকতা, গবেষণার ধৈর্য, অনুসন্ধিত্সু মন, নতুন নতুন ওষুধ আবিষ্কার ও অনুমোদন সম্পর্কে আপডেট তথ্য এবং বিশ্বের বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির গবেষকদের সঙ্গে সার্বিক যোগাযোগ রাখতে পারাটাই এ পেশায় সাফল্যের মূলমন্ত্র।
source: http://goo.gl/RkEaU